ট্রাম্প ও মাস্কের বাজেট প্রত্যাখ্যান
- By Jamini Roy --
- 20 December, 2024
নতুন বছরের শুরুর দিকে সরকারি কার্যক্রম চালু রাখতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের একটি অস্থায়ী বাজেট বিল প্রত্যাখ্যান করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ধনকুবের ইলন মাস্ক। তাদের এই পদক্ষেপে রিপাবলিকান পার্টির ভেতরে উত্তেজনা ও বিভাজন তীব্র হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় মার্কিন অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে অস্থিরতা বেড়ে গেছে।
বাজেট বিলটি মূলত ২০২৫ সালের প্রথম দিকের সরকারি কার্যক্রম চালু রাখতে তৈরি করা হয়েছিল। এতে দুর্যোগ মোকাবিলা, কৃষকদের আর্থিক সহায়তা এবং বাল্টিমোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর পুনর্নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। তবে ট্রাম্প ও মাস্কের প্রত্যাখ্যানের কারণে কংগ্রেসে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিল নিয়ে রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। দলের ভেতরে তীব্র বিতর্কের ফলে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিটিভসের স্পিকার মাইক জনসনের নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক বাজেট বিলটি প্রত্যাখ্যানের কারণ হিসেবে সরকারের ব্যয়নীতি এবং আর্থিক দায়িত্বহীনতাকে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, এই ধরনের বাজেট বরাদ্দ মার্কিন অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে।
তবে এই অবস্থান রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে মার্কিন অর্থনীতি ও জনজীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
রিপাবলিকানদের একাংশ ট্রাম্প ও মাস্কের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেও, দলের আরেক অংশ এর বিরোধিতা করছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ কেবল দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্যে আঘাত হানছে না, বরং সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলছে।
স্পিকার মাইক জনসনের নেতৃত্ব এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বাজেট বিল নিয়ে কংগ্রেসে বিভক্তি এবং অচলাবস্থা তার অবস্থানকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তবে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতি এবং সাধারণ মানুষের জীবনে। বেতন বন্ধ হয়ে যাবে সরকারি কর্মচারীদের, জরুরি সেবাগুলো স্থগিত হতে পারে, এবং ব্যবসায়িক খাতে অনিশ্চয়তা বেড়ে যাবে।
এই পরিস্থিতি ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ কীভাবে পরিচালিত হতে পারে, তার একটি আভাস দিয়েছে। তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নীতিনির্ধারণী পদ্ধতি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
এদিকে, কংগ্রেসে ২০২৫ সালের জন্য পূর্ণাঙ্গ বাজেট তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সামনের কয়েক সপ্তাহে এই সংকটের কী পরিণতি হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে।
এই সংকট নিরসনের জন্য একটি সমঝোতার পথে হাঁটার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকার কার্যক্রম চালু রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন কোনো সমাধান আসতে পারে। তবে ট্রাম্প এবং মাস্কের কঠোর অবস্থান এই সমঝোতাকে জটিল করে তুলছে।
মার্কিন রাজনীতির এই অস্থির পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক চাপ শুধু দেশের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।